প্রবাসে যাওয়া নাকি দেশে থাকা - বিস্তারিত আলোচনা
প্রবাসে যাওয়া নাকি দেশে থাকা - এই প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরপাক খায় | ক্যারিয়ার, আর্থিক সচ্ছলতা, পারিবারিক জীবন, স্বাধীনতা এবং সামাজিক নিরাপত্তা - এই সবকিছু বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় আমাদের? কিন্তু কোন পথটি আপনার জন্য সঠিক? প্রবাস জীবনের সুবিধা-অসুবিধা এবং দেশে থাকার ভালো-মন্দ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো নিচে |
এই লেখাটি মূলত তাদের জন্য
যারা ভাবছেন প্রবাসে যাবো নাকি দেশেই থাকবো? আশা করি, এই লেখাটি পড়ে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
•|• প্রথম অধ্যায়- প্রবাস জীবনের সুবিধা •|•
১. আর্থিক সচ্ছলতা ও উচ্চ আয়।
প্রবাসে গেলে সাধারণত আয় বেশি হয়, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে | যেমন,
মধ্যপ্রাচ্য (সৌদি আরব, UAE, কাতার) বেতন তুলনামূলক বেশি, ট্যাক্স প্রায় নেই বললেই চলে।
ইউরোপ/আমেরিকা/কানাডা- উচ্চ বেতন, সুযোগ-সুবিধা বেশি, স্ট্যান্ডার্ড অব লিভিং ভালো।
অস্ট্রেলিয়া/নিউজিল্যান্ড- কাজের পরিবেশ সুন্দর, মাইগ্রেশন সুযোগ।
২. ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ
বিদেশে কাজ করলে অভিজ্ঞতা বাড়ে, বিশ্বস্তরেও নেটওয়ার্ক তৈরি হয়, বিশেষ করে IT, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল সেক্টরে চাহিদা বেশি।
৩. উন্নত জীবনযাত্রা
- ভালো স্বাস্থ্য সেবা
- উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা (বিশেষ করে সন্তানদের জন্য)
- সুশৃঙ্খল পরিবেশ, কম দুর্নীতি
৪. ভবিষ্যতের নাগরিকত্ব ও স্থায়ী বসবাস
অনেক দেশে কাজের পর স্থায়ী বসবাস (PR) বা নাগরিকত্ব পাওয়া যায়, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুযোগ তৈরি করে।
(শুধুমাত্র মধ্যে প্রাচ্য ছাড়া- অধিকাংশ দেশেই টেক্স দিতে হয়)
•|• দ্বিতীয় অধ্যায়- প্রবাস জীবনের চ্যালেঞ্জ •|•
১. একাকীত্ব ও পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা
প্রবাসে গেলে পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়, যা মানসিক চাপ বাড়ায় | বিশেষ করে বয়স্ক parents থাকলে তাদের দেখাশোনা কঠিন হয়ে পড়ে- ইত্যাদি।
২. সংস্কৃতি ও ভাষার পার্থক্য
বিদেশের সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা-এগুলো মানিয়ে নিতে সময় লাগে অনেকটা সময় লেগে যায় | অনেকেই আবার হোমসিকনেসে ভোগেন।
৩. বৈষম্য ও রেসিজম
কিছু দেশে বিদেশিদের প্রতি বৈষম্য থাকে, বিশেষ করে চাকরি বা সামাজিক ক্ষেত্রে ইত্যাদি।
৪. উচ্চ ব্যয় ও সঞ্চয়ের চাপ
আয় বেশি হলেও ব্যয় ও বেশি (বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকায়) - অনেকেই শুধু সঞ্চয়ের জন্য কষ্টকর জীবনযাপন করেন?
•|• তৃতীয় অধ্যায়- দেশে থাকার সুবিধা •|•
১. পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের কাছে থাকা
দেশে থাকলে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সময় কাটানো যায়, যা মানসিক শান্তি দেয়।
২. নিজের সংস্কৃতি ও পরিবেশে থাকা
নিজের ভাষা, সংস্কৃতি, খাবার- সবকিছুই পরিচিত | কষ্ট করে অ্যাডজাস্ট করতে হয় না।
৩. কম প্রতিযোগিতা ও সহজ জীবন
বিদেশের মতো কঠোর রুটিন, কাজের চাপ বা বৈষম্য নেই? নিজের ব্যবসা বা ফ্রিল্যান্সিং করেও ভালো আয় সম্ভব।
৪. সাশ্রয়ী জীবনযাত্রা
বিদেশের তুলনায় বাসা-বাড়ি, চিকিৎসা, শিক্ষা- সবকিছুর খরচ কম বেশি হলেও - দিন শেষে নিজ দেশেই শান্তি।
•|• চতুর্থ অধ্যায়- দেশে থাকার অসুবিধা •|•
১. আর্থিক সীমাবদ্ধতা
বেতন কম, চাকরির সুযোগ সীমিত, ক্যারিয়ার গ্রোথ ধীরগতির?
২. রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতা
হরতাল, অস্থিরতা, দুর্নীতি-এগুলো নিত্যদিনের সমস্যা?
৩. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতা
সরকারি হাসপাতাল বা স্কুল-কলেজের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে? ভালো সেবা পেতে প্রাইভেটে বেশি খরচ করতে হয়।
৪. ক্যারিয়ারের সীমিত সুযোগ
বিশেষ করে টেকনিক্যাল বা রিসার্চ-ভিত্তিক কাজের সুযোগ খুব কম।
•|• পঞ্চম অধ্যায়- কাদের জন্য দেশ নাকি প্রবাস ভালো? •|•
১। প্রবাস ভালো যাদের জন্য!
- উচ্চ আয় ও ক্যারিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।
- পরিবার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
- নতুন সংস্কৃতি ও ভাষা শিখতে আগ্রহী।
- ভবিষ্যতে স্থায়ীভাবে থাকার ইচ্ছা রয়েছে অন্য দেশে।
২। দেশে থাকা ভালো যাদের জন্য!
- পরিবার নিয়ে ও বন্ধুদের- সঙ্গে দেশে থাকতে, পছন্দ করে যারা।
- যারা ব্যবসা বা ফ্রিল্যান্সিং করে, আয় করতে চান।
- রাজনৈতিক/অর্থনৈতিক স্ট্যাবিলিটি পছন্দ করেন।
- কম চাপে জীবনযাপন করতে চান।
[এরকম অসংখ্য মানুষ আছে, যারা নিজ দেশে থাকতে বেশি পছন্দ করেন]
•|• ষষ্ঠ অধ্যায়- সিদ্ধান্ত কিভাবে নেবেন আপনি •|•
১. আপনার প্রাধান্য কি?
টাকা vs. শান্তি - বেশি আয় নাকি পরিবারের সঙ্গে সময়?
ক্যারিয়ার vs. কমফোর্ট জোন- চ্যালেঞ্জ নেবেন নাকি পরিচিত পরিবেশে থাকবেন?
২. দীর্ঘমেয়াদী প্ল্যান
প্রবাসে গেলে কি ফিরে আসবেন নাকি ঐখানে সেটেল হবেন?
দেশে থাকলে কি আয়ের বিকল্প উপায় আছে নাকি তৈরি করা জন্য কিছু করবেন?
৩. পারিবারিক অবস্থা
বাবা-মা বা সন্তানের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিন।
যদি স্পাউস বা শিশু থাকে, তাদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করুন।
[ আপনার বিবেক দিয়ে, চিন্তা ভাবনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন ]
•|• সপ্তম অধ্যায়- বিকল্প পথ - রিমোট কাজ বা ফ্রিল্যান্সিং করুন •|•
আজকাল অনেকেই | দেশে থেকে বিদেশের কোম্পানির জন্য রিমোট জব করছেন | এতে-
- ✔ বিদেশি স্যালারি + দেশের কম খরচ।
- ✔ পরিবারের সঙ্গে থাকা যায়।
- ✔ ট্রাভেল করার সুযোগ থাকে।
•|• অষ্টম অধ্যায়- নিজ অভিজ্ঞতা থেকে বলতে চাই! •|•
প্রবাস ও দেশ- দুটোরই ভালো-মন্দ দিক আছে? আপনার "লক্ষ্য" পারিবারিক অবস্থা, রিস্ক নেওয়ার ক্ষমতা এগুলোই মূল ফ্যাক্টর?
√ কিছু প্রশ্ন নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন!
• আমি কি পরিবার ছেড়ে থাকতে পারবো?
• আমার স্কিল শিখেছি? মার্কেটে কতটা ডিমান্ড আছে?
• দীর্ঘমেয়াদে আমি- একটা সময় নিজেকে, কোথায় দেখতে চাই?
•
•|• অল্প করে যদি বলি •|•
প্রবাস- যদি টাকা, ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয় - তাহলে প্রবাস জীবন বেঁচে নিতে পারেন ভাল কোন রাষ্ট্র?
দেশে- যদি শান্তি, পরিবার নিয়ে থাকা ও কমফোর্ট জোন মনে করেন - সবকিছু মানিয়ে চলতে ! তাহলে দেশ প্রাধান্য পায়?
•|• কিছু মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে বললে •|•
(এখানে কিছু রিয়েল-লাইফ উদাহরণ দেওয়া! হলো?)
১. রহিমের গল্প (সৌদি আরব থেকে ফিরে ব্যবসা শুরু)
২. প্রিয়ার গল্প (কানাডায় পিআর নিয়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ) গড়ার চেষ্টা করছে?
[ এখন মূল কথা হচ্ছে, বিদেশ মানেই সফলতা নয়, দেশ মানেই ব্যর্থতা নয়! সফলতা আসে পরিশ্রমে - ভাগ্য সৃষ্টিকর্তা যা রেখেছে, তা বিশ্বাস করতে হবে- দেশে থাকলে ভাগ্য ভাল হতে পারে, আবার বিদেশ গেলে ভাগ্য মন্দ হতে পারে! অথবা বিদেশ গেলে ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে - যা কিছু আছে নসিবে সৃষ্টিকর্তার দয়ায় হবে পরিবর্তন - এটা বিশ্বাস করতে হবে আমাদের ]
•|• আমাদের মূল বার্তা হলো •|•
প্রবাস হোক বা দেশ, সঠিক প্ল্যান - প্রিপারেশন ও পরিশ্রমেই, সৃষ্টিকর্তা সফলতার চাবিকাঠি দিয়ে থাকেন! ছোট কোন একটি উসিলায়।
আপনার সিদ্ধান্ত কি? নিচে কমেন্টে শেয়ার করুন!
√ ছোট একটি উপদেশ?
প্রবাসে যাওয়ার আগে- স্কিল ডেভেলপ করুন।
দেশে থাকলে - অনলাইন ইনকামের, বিকল্প দেখুন।
সঞ্চয় ও বিনিয়োগ- দুটো জায়গাতেই জরুরি।
ধন্যবাদ!
ভাল উপদেশ?
ReplyDelete