কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন

ব্লগিং কিভাবে শুরু করবেন

আজকাল অধিকাংশ মানুষই চায় অনলাইন থেকে আয় করতে। অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে এবং বিভিন্ন প্লাটফর্ম বেছে নেয় অনলাইন থেকে আয় করা জন্য।  যেমন কেউ ফেসবুক ও ইউটিউব অথবা ওয়েবসাইট।


কিভাবে অনলাইন থেকে আয় করা যায়

আজকে আমরা এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করবো। কিভাবে আপনি ব্লগিং বা অনলাইন থেকে আয় করবেন।  কিভাবে শুরু করবেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত আজকে জানবো।  আশা করি পোস্টটি ধৈর্য্য সহকারে পড়বেন।

আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন চিন্তার কোন কারণ নাই এই আর্টিকেল টি পড়ুন ধৈর্য্য ধরে। আশাকরি খুব সহজভাবে বুঝতে পারবেন।


ব্লগিং মানে আসলে কি

‌ব্লগিং মানে হলো নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা কে প্রচার করা।
যেকোন তথ্য নিয়মিতভাবে ইন্টারনেটে প্রকাশ করা। আপনি যদি নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর লেখেন - ধরুন! ভ্রমণ, রান্নাবান্না, স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য, অথবা প্রযুক্তি, প্রোডাক্ট রিভিউ, পড়ালেখা, ইত্যাদি। বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করা আর সেটাই হলো ব্লগ বা ব্লগিং।

ব্লগ মানে শুধু লেখাই না - এতে থাকে ছবি, ভিডিও, লিংক এবং ফিডব্যাক ও এমনকি রিভিউ।   বর্তমান সময়ের সাথে সাথে এটা একটি প্রফেশনাল ব্রান্ড বা পেশায় পরিনত হ‌ইয়া গেছে এখনকার সময়।  যেখান থেকে আয় করাও সম্ভব তাই অধিকাংশ মানুষই এখন ব্লগিং কে পেশা হিসেবেই বেছে নিছে। 


আপনি কেন ব্লগিং করবেন

নিজের পছন্দের বিষয়ের উপর লেখালেখি করা বা নিজের অভিজ্ঞতা কে প্রচার করে অন্যকে সাহায্য করা।

আর সেই সাথে Adsense, স্পন্সরশিপ বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যম থেকে আয় করার উপায়।

আপনি অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নিজেকে দক্ষ কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। 


ব্লগিং শুরু করা উপায়

  
আপনি কোন বিষয়টার উপর লিখতে বেশি পছন্দ করেন বা কোন কাজটা করতে আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে।   সেই বিষয় নিয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।

  ভ্রমণের অভিজ্ঞতা
  রান্নার রেসিপি 
 শিক্ষামূলক তথ্য 
 প্রযুক্তি ও মোবাইল রিভিউ
 প্রোডাক্ট রিভিউ 
 স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয় 
  ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি ইত্যাদি।

আপনি যেকোন একটা নিশ নিয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন। যেটা করতে আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে।



Blogger বা WordPress ফ্রি অথবা কাস্টম প্লাটফর্ম বেছে নিতে পারেন 


আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে নতুনদের জন্য Blogger.com সবচেয়ে ভালো চয়েস।  যা কিনা (গুগলের ফ্রি প্লাটফর্ম) আপনার Gmail অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।


অথবা আপনি যদি কাস্টম ব্লগিং করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই WordPress.org দিয়ে শুরু করতে হবে।
সেই সাথে Domain Hosting ও কিনতে হবে।
 আর হোস্টিং কিনার জন্য (Hostinger, Namecheap, GoDaddy ইত্যাদি) এসকল ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার থেকে কিনে ব্লগিং করতে পারেন।
 আমার সাজেস্টেড হলো আপনি যদি একেবারেই নতুন হয়ে থাকেন। তাহলে প্রথমে ব্লগার দিয়ে শুরু করেন পরে WordPress কনভার্ট করতে পারবেন।

ডোমেইন নামটি ইউনিক রাখুন 

ব্লগের জন্য ইউনিক নাম নির্বাচন করুন যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আপনার দেওয়া নামে সার্চ করলে যেনো ভিজিটর খুঁজে পায়।  সবসময় টপ লেবেল ডোমেইন ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।  .com, .org, .net এগুলো হলো টপ লেবেল ডোমেইন। যেমন potivatech.com | আপনি Blogger ব্যবহার করলে সাব ডোমেইন পাবেন,  example.blogspot.com | যেটা পরে আপনি কাস্টম ডোমেইন অ্যাড করে নিতে পারবেন।

অবশ্যই নাম নির্বাচন করার সময় ছোট্ট সহজ ও ইউনিক নাম রাখার চেষ্টা করুন। 

বানান সহজ ও ব্লগের নিশ বা ব্লগের নামের সাথে মিল রেখে ডোমেইন টা কিনুন।


ইউনিক ব্লগ ডিজাইন

কেননা ব্লগের ডিজাইন আপনার যত বেশি ক্লিন মোবাইল ফ্রেন্ডলি ও ইউনিক এবং আকর্ষণীয় হবে।  ইউজাররা ততো বেশিই পছন্দ করবে।   Blogger এ আপনি অনেক ফ্রি বা প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করতে পারেন। 
আমার সাজেস্টেড হলো একটা প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করা। 

 ব্লগ ডিজাইনের পর এই পেজগুলো অবশ্যই রাখুন?

   About Us
  Contact Us
  Privacy Policy
  Terms & Disclaimer
  Search Box
  Categories & Menu Bar

সবকিছু ঠিক ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে কিনা ভালো করে চেক করুন।


নিজের ভাষায় কন্টেন্ট লিখুন বা তৈরি করেন

আপনার কন্টেন্ট যদি নিজের না হয়ে কপি-পেস্ট হয়।  তাহলে, না rank আসবে,  adsense ও পাবেন না। যদি সময় নিয়ে তথ্যবহুল কন্টেন্ট লেখতে পারেন নিজের ভাষায় তাহলে আপনার কন্টেন্ট ও সাইট অবশ্যই দ্রুত গুগলে rank করবে।  কেননা ইউনিক ও নিজের লেখা কন্টেন্ট ব্লগের জন্য এটি একটি প্রাণ বললেই চলে।

কন্টেন্ট লেখা নিয়ে এতোক্ষণ উপরের যে কথাগুলো বলছি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।


প্রতিটা পোস্টে আপনি  যা রাখতে পারেন

সুন্দর ও Seo friendly টাইটেল

শিরোনাম হিসেবে (হেডিং বা সাব হেডিং রাখেন)

ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ 

 Alt Text ও ছবি ভালোভাবে ব্যবহার করেন

 ভালো Keyword ব্যবহার করুন

প্রতিটা জিনিস ভালোভাবে দেখে বুঝে কাজ করার চেষ্টা করেন।  আশা করি ভালো কিছু করতে পারবেন।
 আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বলছি।



Seo সার্চ ইঞ্জিন শিখেন

Seo মানে গুগলে কিভাবে আপনার পোস্ট সহজে খুঁজে পাবেন শুধু ভালো লেখলে কিছু হবে না।  ভালো Seo করাও জানতে হয়।

যেমন
 পোস্টের টাইটেল ও মেটা ট্যাগ

 ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করা

পোস্টে অন্য পোস্টের লিংক ব্যবহার করার 

 Alt Text ছবি দেওয়া ইত্যাদি 

বুঝে শুনে কাজ করলে আপনার কন্টেন্ট ও ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্ট ভালো দেখাবে



নিয়মিত পোস্ট করার চেষ্টা করেন 

শুরুর  দিকে আপনি ৮ থেকে ১০ কন্টেন্ট পোস্ট করেন
প্রতিদিন না পারলেও।  অন্তত প্রতি সপ্তাহে ২টা ভালো কন্টেন্ট পোস্ট করেন।  এতে করে গুগল বুঝতে পারবে আপনি নিয়মিত কাজ করছেন বা খুব সিরিয়াস আছেন।



কখন Adsense এর জন্য প্রস্তুতি নিবেন

Google Adsense হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি বিজ্ঞাপন সংস্থা।  যা থেকে আপনি প্রতি ক্লিকে বা  ভিজিটর অনুযায়ী আয় করতে পারবেন।
কিন্তু Adsense এর কিছু শর্ত সাপেক্ষ আছে?  আর তা হইলো। 
 কন্টেন্ট ইউনিক ও নিজের হ‌ইতে হ‌বে। 
Adsense অ্যাপ্লাই করার জন্য অবশ্যই আপনার ২০টা ভালো পোস্ট থাকতে হ‌ইবো। 
প্রতিটা কন্টেন্ট আপনার নিজের লেখা হ‌ইতে হবে সেই সাথে ৮০০ বা ১০০০ শব্দের হ‌ইতে হবে বা তার বেশি হলেও সমস্যা নাই।
অবশ্যই আপনার ব্লগ ওয়েবসাইট ৩০ থেকে ৬০ দিনের পুরনো হলে বেশি ভালো হয়। তাতে করে Adsense অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার সম্ভাবনা একটু বেশি হয়।

ওয়েবসাইট মেনু ও ফুটারে 

 About Us 

 Contact Us 

 Privacy Policy 

 Terms & Disclaimer 

এই পেজগুলো অবশ্যই রাখুন adsense অনুমোদন পাওয়ার জন্য সহজ হবে।
মোবাইল ফ্রেন্ডলি থিম ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

📌 আপনি যখন Adsense এর জন্য আবেদন করবেন
তারপর ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রিভিউ করবে Adsense টিম।  Approved হলে Congrats লেখার মেইলে আসবে  আপনার ইমেইলে।  আর যদি রিজেক্ট হয় ভয় পাবেন না  যে সমস্যার জন্য রিজেক্ট হয়েছে সেইগুলো সংশোধন করে পুনরায় আবেদন করুন।  
আরেকটি বিষয় মনে রাখা ভালো যে, একজন ব্যক্তির একটাই adsense account approved হবে। 
সেখানে সকল তথ্য আপনার সঠিক দিতে হবে কোন রকম ভুয়া তথ্য দেওয়া যাবে না। তা নাহলে আপনার একাউন্ট টি বাতিল হতে পারে।


Adsense ছাড়াও ব্লগ থেকে আয় করতে পারেন।

 📌 অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেও আয় করতে পারেন পন্য ও সার্ভিস  বা প্রোডাক্ট রিভিউ করে সেই লিংক শেয়ার করে কমিশন থেকে আয় করতে পারেন।

📌  স্পন্সরশিপ পোস্ট দিয়েও আয় করতে পারেন। অথবা কিছু কোম্পানি আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখাবে তাদের থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন নিতে পারেন। 

📌 নিজের পন্য বা কোর্স বিক্রি করেও আয় করতে পারেন। 



FAQ

▪️ Adsense এর সকল Policy Follow করে আবেদন করবেন।

▪️ কোথাও থেকে লেখা কপি-পেস্ট করবেন না।

▪️ প্রতিটা কন্টেন্ট আপনার ভাষায় লিখবেন যেনো ভিজিটর পড়েই বুঝতে পারে। আসলেই আপনি আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।




ব্যাক্তিগত ভাবে বলতে চাই!

আপনি ব্লগিং নিয়ে কাজ করুন বা অন্য যেকোন প্লাটফর্মেই কাজ করেন না কেনো।
অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য্য ধরে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
এমন না যে আপনি ব্লগ চালু করছেন কিছুদিন পরেই ইনকাম শুরু হ‌ইয়া যাইব বিষয়টা এমন না।  এটা ভাবলে আপনার ব্লগিং থেকে সফল হ‌ওয়ার চান্স খুব কম হবে। 

সফলতা অর্জনের জন্য অবশ্যই ধৈর্য্য ধরে কাজ করতে হবে। হয়তো ৩ থেকে ৬ মাস পর যখন  ইনকাম শুরু হবে। তখন নিজের কষ্টের প্রতিফলন দেখতে পাবেন।


•| শুভ হোক সবার ব্লগিং যাত্রা সুস্থ ও নিরাপদে থাকুন |•

written by Potiva Tech 
Next Post
No Comment
Add Comment
comment url